শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঘোষণা :

মণিরামপুরে সম্পত্তির লোভে কুলাঙ্গার পুত্র আঙ্গুল ঢুকিয়ে মায়ের দু’চোঁখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা

শুভেচ্ছা টিভি নিউজ ডেস্কঃ

মণিরামপুরে মায়ের নামের সম্পত্তির জোরপূর্বক লিখে নিতে না পেরে গর্ভধারিনী মাকে প্রহারের পর চোঁখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দু’চোঁখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করেছে কুলাঙ্গার পুত্র মেহেদী হাসান টিটো। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গোপালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রক্তাক্ত অবস্থায় মাকে উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে কুলাঙ্গার ওই পুত্র এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা-কুলাঙ্গার পুত্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানাযায়, উপজেলার খাঁনপুন ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আব্দুল খালেক দফাদার-স্ত্রী, ৩ পুত্র, এবং ১ কন্যা সন্তান রেখে কয়েক বছর আগে ইন্তেকাল করেছেন। তার স্ত্রীর হাসিনা খাতুনের নামে রয়েছে পাঁকাবাড়িসহ বেশ কয়েক বিঘা সম্পত্তি। ইতোমধ্যে মেঝ পুত্র তানভিরুল ইসলাম টুটুল পর্তুগালে পাড়ি জমান। এছাড়া অন্যান্য সন্তানদের বিবাহসাদী সম্পূর্ণ হয়েছে। বড় পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান বাদল একটি সমবায় সমিতির পরিচালক। ছোট পুত্র মেহেদী হাসান টিটো ব্যবসায়ী। তারা দুই ভাই পৃথকভাবে বসবাস করে আসছেন। মা হসিনা খাতুন ইতিমধ্যে ছেলে মেয়েদের মাঝে অধিকাংশ সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা করে দেন। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে মায়ের নামে বসতবাড়িসহ কিছু সম্পত্তি থাকা নিয়ে। খানপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী জানান, ছোট পুত্র মেহেদী হাসান টিটো বসতবাড়ির সব জমি দাবি করেন মায়ের কাছে। কিন্তু মা টিটোকে আট শতক জমি দিতে রাজি হন। মুলত: এ নিয়েই টিটো তার মায়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এ ঘটনায় ইতিপূর্বে টিটো তার মাকে কয়েকবার মারপিট করে এবং হত্যারও হুমকি দেয়। ফলে উপায়ন্ত না পেয়ে মা বাদি হয়ে টিটোর বিরুদ্ধে থানা এবং আদালতে মোট তিনটি মামলা করেন।এ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কয়েকদফা শালিসও হয়েছে।
এ বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বাড়িতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে টিটো মায়ের উপর হামলা চালিয়ে বেদম প্রহর করে। এক পর্যায়ে টিটো আঙ্গুল ঢুকিয়ে তার মায়ের দু’চোঁখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করে। এতে তার মা রক্তাক্ত হন। এ সময় মায়ের চিৎকারে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সে পালিয়ে যায়। পরে মাকে উদ্ধারের পর প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই রাতেই মাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। টিটোর বড় মামা মাসুদুর রহমান জানান, ইতিপূর্বে বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাদলও তার মায়ের সাথে খারাপ আচরন করে। তবে ছোট ছেলে এ নিয়ে কয়েক দফায় তার মাকে মারপিট করল। তিনি জানান, এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা। বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাদল জানান, টিটোর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মা হাসিনা খাতুনের আর্তনাদ কুলাঙ্গার ছেলের হাত থেকে তিনি রক্ষা পেতে সকলের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী ধিক্কার দিয়ে জানান, এ ঘটনায় টিটোকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনা উচিত। মণিরামপুর থানার ওসি (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এখনও কেউ মামলা করেননি। মামলা করলে কুলাঙ্গার ছেলেকে গ্রেফতারপূর্বক কঠোর শাস্তির মুখোমুখি দাড় করানো হবে। এ দিকে টিটোর মামা মাসুদুর রহমান জানান, তার বোন হাসিনা খাতুনের (টিটোর মা) দু’চোখের অবস্থা ভাল নয়। তিনি চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা:হিমাদ্রী শেখরের তত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছে


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা